ফরজ গোসলের কারণ ও নিয়ম জেনে নিন এখনই

Rate this post

ফরজ গোসলের কারণ ও নিয়ম জেনে নিন এখনইফরজ গোসলের কারণ ও নিয়ম নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ফরজ গোসলের আলাদা কোনও নিয়ত নেই। গোসল শুরুর সময় মনে মনে শুধু এতোটকু বললেই হয়ে যাবে যে, আমি পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করছি। আরবিতে কোন দোয়া পড়া বা মুখে উচ্চারণ করে জোরে জোরে বলা আবশ্যক নয়। মনে মনে বললেই হয়ে যাবে।

গোসল ফরজ হওয়ার কারণ

গোসল ফরজ হয় কিছু কারণে। এর মধ্যে তিনটি কারণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই তিনটির কোনও একটি ঘটলে গোসল না করলে পবিত্রতা অর্জন হয় না এবং অপবিত্র শরীরে কোনও ধরনের ইবাদত করা যায় না। গোসল ফরজ হওয়ার তিনটি কারণ হলো-

১. স্বপ্নদোষ বা বীর্যপাত হওয়া: কোনও প্রাপ্ত বয়্স্ক নারী বা পুরুষের জাগ্রত অবস্থায় বীর্যপাত হলে বা ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হয়ে যাবে। তাই কোনো ব্যক্তি ঘুম থেকে ওঠার পর যদি তার কাপড়ে নাপাকির চিহ্ন দেখে, তাহলে তার স্বপ্নদোষ বা বীর্যপাতের কথা স্মরণ থাকুক বা না থাকুক— তার ওপর গোসল ফরজ হবে। (হিদায়া : ১/৪৫, আন-নুতাফ ফিল ফাতাওয়া, পৃষ্ঠা : ২৯)

২. সহবাসের পর: স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের পর উভয়ের জন্য গোসল করা ফরজ। এক হাদিসে হজরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, ‘যখন কোন পুরুষ তার (স্ত্রীর) দুই পা ও দুই রানের মাঝে বসবে এবং একের লজ্জাস্থান অপরের লজ্জাস্থানের সাথে লেগে যাবে তখন (দু’জনেরই) গোসল ফরজ হয়ে যাবে।’ (মুসলিম: ৩৪৯)

২. নারীদের ঋতুস্রাব অথবা পিরিয়ড হলে

নারীদের ঋতুস্রাব অথবা পিরিয়ড হলে গোসল ফরজ হয়। তাই এর থেকে পবিত্র হওয়ার পর নারীদের গোসল করতে হয়। আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স) ফাতেমা বিনতে আবু ইবাইসকে আদেশ করেন, ‘হায়েজ শুরু হলে সালাত ছেড়ে দাও। আর হায়েজ শেষ হলে গোসল কর এবং নামাজ পড়তে শুরু কর।’ (বুখারি: ৩২০, আধুনিক: ৩০৯, ইফা: ৩১৪) গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি? নিয়ম ও নিয়তসহ জেনে নিন।

এছাড়াও আরও দুটি অবস্থায় গোসল করা ফরজ। তাহলো-

১. সন্তান প্রসবের পর রক্তপাত বন্ধ হলে।
২. কোনো অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে।

নারীর ফরজ গোসলের নিয়ম

পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হওয়ার নিয়ত করতে হবে। মানে স্ত্রী-সঙ্গম, স্বপ্নদোষ, ঋতুগ্রাব ও প্রসব ইত্যাদির কারণে যে নাপাকি এসেছে, সেটা দূর করার নিয়ত করবেন। অর্থাৎ, মনে মনে এই চিন্তা করবেন যে — নাপাকি দূর করার জন্য গোসল করছি।

এরপর লজ্জাস্থানে লেগে থাকা নাপাকি প্রথমে ধুয়ে নেবেন। তারপর দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেবেন। সাবান বা এজাতীয় কিছু দিয়ে ধুতে পারলে ভালো; না হলেও অসুবিধা নেই।

তারপর নামাজের অজুর মতো করে পূর্ণাঙ্গ অজু করবেন। এরপর পানি দিয়ে মাথা ভিজিয়ে নেবেন। তারপর প্রথমে শরীরের ডান অংশে এবং পরে বাম অংশে পানি ঢালবেন। তারপর সারা দেহে পানি ঢালবেন।

পুরুষের ফরজ গোসলের নিয়ম

পুরুষের জন্য আলাদা করে ফরজ গোসলের কোনও নিয়ম নেই। একজন পুরুষের ওপর গোসল ফরজ হলে তাকেও প্রথমে শরীরে লেগে থাকা নাপাকি দূর করার নিয়ত করতে হবে। এরপর লজ্জাস্থানে লেগে থাকা নাপাকি প্রথমে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর উপরে বর্ণিত নিয়মেই গোসল পূর্ণ করতে হবে।