ইফতারের দোয়া আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সারাদিন রোজা রেখে ইফতার করেন মুসলমানেরা। ইফতার হলো বরকতময় খাবার। এই খাবার খাওয়ার আগ মুহুর্তে আল্লাহ তায়ালা রোজাদারের দোয়া, মনের ইচ্ছা পূরণ করেন। ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া কবুলের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে হাদিসে।
মহানবী (সা.) ইফতারের সময় দোয়া করতেন। মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেছেন, নবীজি (সা.) যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন –
ইফতারের আগে ও পরের দোয়া (বাংলা-আরবি অর্থসহ)
ইফতারের দোয়া আরবি
بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা আফতারতু।
ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থ
আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ, তোমার জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমার রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি। (আবু দাউদ হাদিস, ২৩৫৮)
নির্ধারিত দোয়া ছাড়াও কায়মনো বাক্যে আল্লাহর কাছে জীবনের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়। জান্নাত চাওয়া এবং দোজখ থেকে নাজাত লাভের দোয়া করা যেতে পারে ইফতারের সময়।
সূর্যাস্তের সময় মাগরিবের আজান দেওয়ার সময় রোজাদারেরা যে খাবার খেয়ে থাকেন তাকে ইফতার বলা হয়। ইফতার করা সুন্নত। সারা দিন রোজা রাখার পর রোজাদারের জন্য ইফতারের মুহূর্তটা পরম আনন্দের। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে। আরেকটি হচ্ছে যখন সে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৭৬৬)
মহানবী (সা.) নিজে ইফতার করেছেন এবং সাহাবিদের ইফতার করতে উৎসাহিত করেছেন। ইফতার না করে লাগাতার না খেয়ে রোজা রাখা নিন্দনীয়।
Ramadan Calendar 2024 Bangladesh : Sehri and Iftar Time
আলকামা ইবনে সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ সাকাফি স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন, ‘আমরা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাসূল (সা.) এর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসতাম। তিনি আমাদের জন্য মুগিরা ইবনে শোয়ার ঘরের পাশে দুইটি তাঁবু টানিয়ে দিতেন। বেলাল (রা.) আমাদের কাছে ইফতার নিয়ে আসতেন। আমরা জিজ্ঞেস করতাম, বেলাল, রাসূল (সা.) ইফতার করেছেন? বেলাল (রা.) বলতেন, হ্যাঁ, আমি তোমাদের কাছে রাসূল (সা.) এর ইফতার করার পরই এসেছি এবং আমরাও খেয়ে এসেছি।’ (আল মুজামুল কাবির লিত-তাবরানি, হাদিস, হাদিস, ৪২০০)
মহানবী (সা.) তাড়াতাড়ি ইফতার করার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। ইফতারের ক্ষেত্রে বিলম্ব করতে নিষেধ করেছেন। প্রত্যেক মুসলিমের উচিত ইফতারের সময় অন্য কোনো ব্যস্ততা না রাখা এবং মাগরিবের সময় শুরু হওয়ার পর যথাসম্ভব দ্রুত ইফতার করা। আগে আগে ইফতার করা সুন্নত আমলের অন্তর্ভুক্ত।
এ বিষয়ে এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যতদিন লোকেরা দ্রুত ইফতার করবে, ততদিন দ্বীন স্পষ্ট ও বিজয়ী থাকবে, কেননা ইহুদি ও খ্রিস্টানরা বিলম্বে ইফতারি করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ২৩৫০)
ইফতারের সময় যা করবেন
- সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা।
- ইফতারের সময় অন্য কাজে ব্যস্ত না থাকা।
- ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
- ইফতারের সময় ভারি খাবার না খাওয়া।
- খেজুর, সাদা পানি কিংবা দুধ দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ জামাতে পড়া।