রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো। রোজা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। ঈমান, নামাজের পর সুস্থ, স্বাভাবিক প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষ সবার জন্য বাধ্যতামূলক ইবাদত হলো রমজান মাসের রোজা। প্রতিদিন সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সুর্যাস্ত পর্যন্ত পাহানার, স্ত্রী সহবাস, কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত বিধি-নিষেধ থেকে বিরত থাকাকে রোজা বলা হয়।
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মুসলিমের উপর রোজা রাখা ফরজ। কেউ রোজাকে অস্বীকার করলে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে। শরীয়তের দৃষ্টিতে ইসলামের প্রধান বিধান রোজা অস্বীকার করা ব্যক্তিকে কাফের ও মুরতাদ বলে গণ্য করা হয়। তাই গুরুত্বসহ রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলিমের ওপর আবশ্যকীয়।
Ramadan Calendar 2024 Bangladesh : Sehri and Iftar Time
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৩)
রোজার ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে আল্লাহ তাআলা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, তিরমিজি)
রোজা রাখার জন্য নিয়ত করা জরুরি। তবে রোজার জন্য ঘুম থেকে ওঠা ও সাহরি খেলে তা নিয়ত বলে গণ্য হবে। আলাদা করে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত না করলেও রোজা আদায় হয়ে যাবে। কারণ, নিয়ত হলো- মনের ইচ্ছা, তাই মুখে রোজার নিয়ত করা জরুরি নয়।
তবে বাংলাদেশে অনেকের মাঝে রোজার একটি আরবি নিয়ত প্রসিদ্ধ। এটি হাদিস ও ফিকাহের কোনো কিতাবে বর্ণিত হয়নি। তবে কেউ চাইলে পড়তে পারেন। (তবে জেনে রাখা উচিত যে, নিয়ত পড়ার চেয়ে নিয়ত করা গুরুত্বপূর্ণ।)
রোজার নিয়ত আরবি
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ
নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
রোজার নিয়ত বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
ইফতারের দোয়া আরবি
রোজা শুরু হয় সেহরি এবং রোজার নিয়তের মাধ্যমে। আর শেষ হয় সূর্যাস্তের সময় ইফতারের মাধ্যমে। ইফতার করা সুন্নত। সময় হয়ে যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি ইফতার করতে বলেছেন আল্লাহর রাসূল সা.। ইফতারের সময় রাসূল সা. একটি দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো-
بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা আফতারতু।
ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থ
আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ, তোমার জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমার রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি।’ (আবু দাউদ হাদিস, ২৩৫৮)