সূরা নাস (Surah Al-Nas) পবিত্র কোরআনের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা। যা কোরআনের ১১৪তম ও সর্বশেষ সূরা। এই সূরা পবিত্র নগরী মদিনায় নাজিল হয়েছে। সূরা নাস (Surah Al-Nas) এর আয়াত সংখ্যা ৬ এবং রুকু ১।
সূরা নাস (Surah Al-Nas) বাংলা উচ্চারণ অর্থ এবং ফজিলত
সূরা নাস (Surah Al-Nas) এর বিশেষ ফজিলতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। প্রতিদিন গুরুত্বসহকারে এই সূরা পড়ার কথাও বলা হয়েছে হাদিসে। এক বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস (Surah Al-Nas) পড়বেন তিনি সকল বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবেন। (জামে তিরমিজি, হাদীস : ২৯০৩; সুনানে আবু দাউদ,হাদীস : ১৫২৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১৯২৬৬; সুনানে নাসাঈ ২/১৫৪; তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৯১৭)
উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক সঙ্গে মিলাতেন। তারপর উভয় হাতে ফুঁক দিতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস (Surah Al-Nas) পড়তেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন। (সহি বুখারি ৫০১৭, সুনানে আবু দাউদ : ৫০৫৮, জামে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৪০২)
সূরা নাস (Surah Al-Nas) আরবি উচ্চারণ
قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ النَّاسِ ۙ﴿۱﴾ مَلِکِ النَّاسِ ۙ﴿۲﴾﴾اِلٰهِ النَّاسِ ۙ﴿۳﴾مِنۡ شَرِّ الۡوَسۡوَاسِ ۬ۙ الۡخَنَّاسِ ۪ۙ﴿۴﴾الَّذِیۡ یُوَسۡوِسُ فِیۡ صُدُوۡرِ النَّاسِ ۙ﴿۵﴾مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ ﴿۶
সূরা নাস (Surah Al-Nas) বাংলা উচ্চারণ
কুল আউযু বিরাব্বিন নাস, মালিকিন্ নাস, ইলাহিন্ নাস, মিন্ শররিল ওয়াস্ ওয়াসিল খান্নাস, আল্লাযী ইউওযাসবিসু ফী ছুদুরিন্নাস, মিনা জিন্নাতি ওয়ান্নাস।
READ MORE – রোগ মুক্তির দোয়া বাংলা উচ্চারণসহ জেনে নিন
সূরা নাস (Surah Al-Nas) বাংলা অর্থ
বলো, আমি শরণ নিচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধীশ্বরের, মানুষের উপাস্যের, তার কুমন্ত্রণার অমঙ্গল হতে, যে সুযোগ মতো আসে ও সুযোগমতো সরে পড়ে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিন বা মানুষের মধ্য থেকে।
সূরা নাস (Surah Al-Nas) শানে নুযুল
সূরা নাস (Surah Al-Nas) এর শানে নুযুল হলো- সূরা ফালাক ও সুরা নাস একসঙ্গে নাজিল হয়েছে। এই দুই সুরা নাজিলের প্রেক্ষাপট বা শানে নুযূল হল, হুদাইবিয়ার ঘটনার পর লাবীদ ইবনে আসাম এবং তার কন্যারা রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর জাদু করেছিল। ফলে তিনি কিছুটা কষ্ট অনুভব করেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা যাদুকরের নাম এবং কোথায়, কিভাবে জাদু করা হয়েছে এ সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন। চিরুনী ও চুলের সাহায্যে যাদু করা হয়, যা যারওয়ান কূপের তলদেশে একটি পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এই অসুস্থতার সময় প্রশ্নোক্ত সূরাদ্বয় নাজিল হয়েছে।
সুরা দুটি নাজিল হওয়ার পর ফেরেশতাদের বিবরণ অনুযায়ী ওই কূপ থেকে তা তুলে আনা হয়। অতপর ওই সূরা দুটি পড়ে গিরা খুললে তৎক্ষণাত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ হয়ে উঠেন। এই সূরা দুটি পড়লে অনিষ্ট ও যাদু থেকে হেফাজতে থাকা যায়।