কবর জিয়ারতের দোয়া, নিয়ম ও মোনাজাত বাংলা উচ্চারণ সহ আজকে বিস্তারিত আলোচনা হবে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মানুষকে মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করতে বলেছেন। সবচেয়ে বুদ্ধিমান লোক কে? এমন প্রশ্নের উত্তরে নবীজী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অধিকহারে মৃত্যুকে স্মরণ করে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণে ব্যস্ত থাকে।
ইসলামে একসময় কবর জিয়ারতের অনুমতি ছিল না। পরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কবর জিয়ারতের অনুমতি দেন। এক হাদিসে এসেছে নবীজী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কবর জিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম। এখন থেকে কবর জিয়ারত করো। কেননা, তা দুনিয়া বিমুখতা এনে দেয় এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’
কবর জিয়ারতের দোয়া আরবি
(১) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনার কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দোয়া পাঠ করেন-
السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالأَثَرِ
(২) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) একটি কবর জিয়ারতে গিয়ে এই দোয়া পাঠ করেন-
السَّلامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤمِنينَ وإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاحِقُونَ
কবর জিয়ারতের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
(১) আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর; ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আ-সার।
(২) আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মুমিনিন ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লা-হিকুন।
আরো পড়ুন – স্বামী স্ত্রী সহবাসের দোয়া ও নিয়ম কানুন জেনে নিন
কবর জিয়ারতের দোয়া বাংলা অর্থ
(১) হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন, তোমরা আমাদের আগে কবরে গিয়েছ এবং আমরা পরে আসছি। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৫৩)
(২) মুমিন এই ঘরবাসীদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হবো। (সহিহ মুসলিম : ২৪৯)
কবর জিয়ারত করার নিয়ম
কবরস্থানে প্রবেশের পর প্রথমেই কবর জিয়ারতের দোয়া পড়বেন। এরপর কবরবাসীর ইসালে সওয়াবের জন্য দরুদ শরিফ ও বিভিন্ন সুরা পড়তে পারেন। পরে কবরবাসীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন। উপরে দুটি দোয়া দেওয়া আছে। সেগুলোও পড়তে পারেন।
বিভিন্ন হাদিসে কবর জিয়ারতের সময় কয়েকটি সুরার বিশেষ ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসি উল্লেখযোগ্য।
কবর জিয়ারতের সময় কবর সামনে রেখে দুই হাত তুলে মোনাজাত করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করাই উত্তম।
শুক্রবার অর্থাৎ জুমার দিন কবর জিয়ারত করা ভালো। হাদিসে রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি প্রতি জুমায় তার মা-বাবা বা তাদের একজনের কবর জিয়ারত করবে, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারীদের মধ্যে গণ্য করা হবে।’ (আল মুজামুল আউসাত: ৬১১৪)