স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্মার্ট জেলা গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রস্তাবিত ৫২ উদ্ভাবনী আইডিয়ার গ্রুমিংসহ শেষ হলো ৩ দিনব্যাপী স্মার্ট ডিসট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এর বুটক্যাম্প। এই উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলো পরবর্তীতে কারিগরি মূল্যায়নের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের গাঙচিল মিলনায়তনে এই বুটক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো: সামসুল আরেফিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর ।
স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্মার্ট জেলা গড়ে তুলতে ‘স্মার্ট ডিসট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩’ প্রতিযোগিতা শুরু করে এটুআই ইনোভেশন ফান্ড। সারাদেশের জেলা প্রশাসন কর্তৃক স্বল্পমেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য ৭৫টি আইডিয়া জমা দেয় । প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ৫২টি জেলা প্রশাসন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ১৭ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলে এই বুটক্যাম্প।
ফিজিবিলিটি, আইডিয়া কনসেপ্ট, বিজনেস স্ট্র্যাটেজি, টেকনোলজি ও টিম ম্যানেজমেন্ট সহ ১০টি সেশনে বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের মেন্টরিং প্রদান করা হয়। প্রতি জেলা থেকে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, একজন সহকারী কমিশনার, এবং একজন টেকনিক্যাল পার্সনসহ সবমিলে ১৫৬ জন প্রতিনিধি এই বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। বুটক্যাম্পের অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটুআই-এর এনপিএফ স্পেশালিস্ট (উপসচিব) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান।
স্মার্ট জেলা গঠনের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ ত্বরান্বিত হবে উল্লেখ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এটুআই কর্তৃক আয়োজিত স্মার্ট ডিসট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩ একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ এবং আমি এটুআই’কে সাধুবাদ জানাই এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ৬৪ জেলাকে এই চ্যালেঞ্জ ফান্ডের আওতায় নেওয়া হয়। স্মার্ট জেলা গঠনে জেলা প্রশাসন থেকে দারুণ সব আইডিয়া পাওয়া গেছে। আইডিয়াগুলো নিয়ে যদি সঠিকভাবে কাজ করা যায় আমার বিশ্বাস জেলাগুলো স্মার্ট জেলাতে রূপান্তর হবে। একইসঙ্গে দক্ষ প্রশাসন তৈরি হবে।’
স্মার্ট বাংলাদেশ: রূপকল্প ২০৪১-এর নেতৃত্ব দেয়ার জন্য সিভিল সার্ভিসকে জ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করতে উৎসাহিত করে এটুআইর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘প্রশাসনে যারা আছেন তাদের ওপর পুরো বাংলাদেশের উন্নয়ন অনেকটাই নির্ভর করে। ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশও নির্ভর করছে। এই ধরনের আয়োজন জেলার প্রশাসনকে অনুপ্রেরণা দেবে। এই অনুপ্রেরণাকে সঙ্গী করে সরকারের রূপকল্প ২০৪১: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিয়োজিত হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-এর প্রক্রিয়া এবং পিচডেক উপস্থাপনার নিয়মাবলী সম্পর্কে উপস্থাপনা করেন এটুআই ইনোভেশন ফান্ড প্রধান নাঈম আশরাফী। তিনি বলেন, ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলজেন্স, বিগ ডাটা এনালাইটিক্সসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সুরক্ষা, কৃষি, ম্যানুফ্যাকচারিং, সেবা খাত, প্রশাসন, ইউটিলিটিসহ নাগরিকবান্ধব সেবা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্ভাবনী আইডিয়া জমা দেন জেলা প্রশাসকগণ। এখান থেকে বিজয়ী এক বা একাধিক জেলা প্রশাসক স্মার্ট জেলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত সিড ফান্ড পাবেন।’
উল্লেখ্য, উক্ত বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী জেলা প্রশাসকরা অংশ নিবেন স্মার্ট ডিসট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এর চূড়ান্ত রাউন্ডে। এই চূড়ান্ত পর্ব থেকে অভিজ্ঞ বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত সিলেকশন প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে প্রতিযোগিতার এর চূড়ান্ত ফলাফল।
বুটক্যাম্পে মেন্টর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ-এর মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, ডিভাইন আইটি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান (রাসেল), এটুআই-এর এনপিএফ স্পেশালিস্ট (উপসচিব) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান। এছাড়াও এটুআইসহ সংশ্লিষ্টরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি