বেসিস-এসইআইপি প্রকল্প : তথ্যপ্রযুক্তি জব ফেয়ারে চাকরি দিচ্ছে ৩৫ কোম্পানি

Rate this post

বেসিস-এসইআইপি প্রকল্প সোমবার বেসিস-এসইআইপির উদ্যোগে রাজধানীর ড্যাফোডিল প্লাজায় অনুষ্ঠিত হলো তথ্যপ্রযুক্তি জব ফেয়ার, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এবং সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের এসইআইপি প্রকল্পের উপনির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মাহফুজুল আলম খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের এসইআইপি প্রকল্পের সহকারী নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) মো. রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বেসিসের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান।

ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং পর্বে চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য প্রদান করেন বেসিসের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরী হিমিকা, কর্পোরেট ট্রেইনার ডন সামদানী এবং ব্রেন স্টেশন ২৩–এর প্রতিষ্ঠাতা-সিইও রাইসুল কবির।

চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখরিত এই জব ফেয়ার-এ ৩৫ কোম্পানি ২০০ এর অধিক শূন্য পদে চাকরি দিতে প্রার্থীদের থেকে জীবন বৃত্তান্ত জমা নেন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজন চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। চাকরিপ্রত্যাশীরা নিজেদের পছন্দমতো কোম্পানির স্টোলে গিয়ে পছন্দের ক্যাটাগরিতে আবেদন করেন। মেলা চলাকালীন সময়েই কিছু কোম্পানি ইন্টারভিউ এর মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশিত প্রার্থীদের চাকরি নিশ্চিত করেন এবং কিছু কোম্পানি পরবর্তীতে পরীক্ষার নেওয়ার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেন।

বেসিস ২০১৫ থেকে এ প্রকল্পের একটি গর্বিত অংশীদার হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে কাজ করছে। ২০১৫-২০১৮ পর্যন্ত বেসিস-এসইআইপি ট্রাঞ্চ-ওয়ান এবং ২০১৮-২০১৯ পর্যন্ত ট্রাঞ্চ-ওয়ান এডিশনাল বাস্তবায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার তরুণ শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পায়। ২য় দফায় বেসিস-এসইআইপি ট্রাঞ্চ-থ্রি ২০২০ সালে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোভিডের কারণে ২০২১ এর জুন থেকে কার্যত কার্যক্রম চালু হয়। প্রাথমিকভাবে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে আরও ৫০০ বাড়িয়ে প্রায় ৮ হাজারের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে বেসিস বেসিস-এসইআইপি। আগামী ডিসেম্বর ২০২৩ অর্থাৎ চলতি বছরেই শেষ হয়ে যাচ্ছে এ প্রকল্প।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মাহফুজুল আলম খান বলেন, “আপনাদের মতো তরুণ উদ্যমী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাধ্যমেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত এবং সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দেন এবং সেটা বাস্তবায়ন হয়। তারপর তিনি স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দেন আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হলেন আপনারা। আপনাদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। কারণ প্রত্যেকটা সেক্টরেই দরকার তথ্য প্রযুক্তি আর তথ্যপ্রযুক্তির কাঁচামাল হচ্ছেন আপনারা। তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানব সম্পদের মাধ্যমেই ক্ষেত্রটিকে আরও যথোপযুক্ত করা সম্ভব।”

মো. রুহুল আমিন বলেন, “এমন কোন সেক্টর নেই যেটাতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। আজকে এখানে যারা সার্টিফিকেট পাচ্ছেন তাদের যাত্রা কিন্তু এখানেই শেষ নয় বরং এখান থেকে শুরু মাত্র। সারা বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির বিশাল বাজার রয়েছে এবং তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানুষদের চাহিদাও আছে অনেক। আপনাদের নিজেদেরকে যোগ্য প্রমাণ করে সেই জায়গাতে পৌঁছাতে হবে।”

বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন। যার জন্য চারটি পিলার রয়েছে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনোমি এবং স্মার্ট গভার্নমেন্ট। আমাদের কাজের জায়গা আছে দুইটি পিলার গড়তে। একটা স্মার্ট সিটিজেন, আরেকটা স্মার্ট সোসাইটি। স্মার্ট র্সিটিজেন হলেই স্মার্ট সোসাইটি গড়া সম্ভব। আমরা সবাই স্মার্ট সিটিজেন হয়ে স্মার্ট সোসাইটি তৈরি করতে পারি এবং তারপর আমরা আমাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু ভাবে পালনের মাধ্যমে স্মার্ট ইকোনমি গড়ে তুলবো।”

বেসিসের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান বলেন, “এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনসম্পদ তৈরি করা। প্রশিক্ষণার্থীদের স্টাইপেন্ড এবং প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থানে সহায়তা করা। এই প্রকল্পে ৭১৫০ জন নতুন গ্র্যাজুয়েট এবং ৮০০ আপস্কিলিং ট্রেনিং পাচ্ছে। ট্রাঞ্চ-থ্রি প্রকল্পে প্রশিক্ষিতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০.৭৫ শতাংশের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। যদিও বরাবরই মেয়েদের তথ্যপ্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত করা আমাদের প্রচেষ্টা থাকে, তদুপরি এবার আমরা দুটো শুধু মেয়েদের ব্যাচসহ ২৩ শতাংশ মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিতে পেরেছি।”