জামদানী শিল্পের প্রসারে ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার উদ্বোধন উদ্বোধন

Rate this post

জামদানী শিল্পের প্রসারে ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার উদ্বোধন উদ্বোধনদেশের জামদানী শিল্পকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রসারের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের বিসিক জামদানী শিল্প নগরীতে আজ একটি ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। বিসিক, তুর্কি সহযোগিতা এবং সমন্বয় এজেন্সি (টিকা)-এর সহায়তায় বুধবার বিকালে এটি উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিয সেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো: সাইফুল ইসলাম, টিকা বাংলাদেশের কোর্ডিনেটর শেভকি মারথ বারিশ, এটুআই-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মাজেদুল ইসলাম, বিসিকের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) অখিল রঞ্জন তরফদার, এটুআই-এর হেড অব কমার্শিয়ালাইজেশন রেজওয়ানুল হক জামিসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এই ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার উদ্যোগের ফলে, এখন থেকে স্থানীয় জামদানী শিল্প পল্লীর উদ্যোক্তাগণ তাদের তৈরিকৃত পণ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বক্ষণিক সহায়তা পাবেন। সেই সাথে, বি-টু-বি ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও তারা এই সেন্টারের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়িক পরিধি ও আর্থিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধির লক্ষে এটুআই-একশপ তার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ও পরামর্শ সেবা প্রদানের পাশাপাশি নিজের বিস্তৃত বি-টু-বি নেটওয়ার্কের সাথে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনেও কাজ করবে।

এই উদ্যোগের সাধুবাদ জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিয সেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতার আগে থেকেও বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথভাবে কাজ করে আসছে। এই ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এটুআই-এর সঙ্গে সম্পর্ক সামনের দিনগুলোতে আরো সুদৃঢ় হবে। ই-কমার্স উন্নয়নে যৌথভাবে আরও অনেক কাজ করতে চাই। উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে এই উদ্যোগের সাধুবাদ জানাই।’

সম্প্রতি, বিসিক–বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির করপোরেশন, একটি ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি’র সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআইকে একটি স্পেস বরাদ্দ প্রদান করে। এই সেন্টারে প্রয়োজনীয় যাবতীয় সরঞ্জামাদি প্রদান করে সহযোগিতা করে তুরষ্ক সরকারের সহযোগিতা সংস্থা, তুর্কি সহযোগিতা এবং সমন্বয় এজেন্সি (টিকা)। বিসিক এবং টিকা’র সাথে যৌথভাবে এই ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা ও সার্বিক তত্বাবধান ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকছে এটুআই।

২০৪১ এর মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার সরকারের চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিসিক তার প্রচলিত মার্কেটের পাশাপাশি গড়ে তুলেছে আধুনিক ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস- বিসিক অনলাইন মার্কেট। বিসিকের উদ্যোক্তারা সরাসরি নিজেরাই এই মার্কেটপ্লেসে নিবন্ধিত হতে পারবেন এবং তাদের পণ্যের যাবতীয় তথ্য ও ছবি আপলোড করতে পারবেন, যা তাদের পণ্যের প্রচার ও প্রসারে ব্যবহৃত হবে। তারা চাইলে এ কাজে নতুন প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টারের সহযোগিতা নিতে পারবেন।

এই বিসিক অনলাইন মার্কেটে আপলোডকৃত সকল বিসিক পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে এটুআই-একশপ তার নিজস্ব মার্কেটপ্লেস ‘একশপ’ এর মাধ্যমে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটপ্লেসের সাথে সংযুক্ত করবে। শুধু তাই নয়, বিসিক উদ্যোক্তাদের যেকোন পণ্য অর্ডারের ক্ষেত্রে,দেশের অভ্যন্তরে যেকোন প্রত্যন্ত অঞ্চলে একশপ তার নিজস্ব ডেলিভারি সেবা প্রদানে সক্ষম। স্থানীয় বিসিক উদ্যোক্তাগণ যদি তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক বাজার হতে পণ্য আমদানী করতে চান, এ ক্ষেত্রেও একশপ খুব স্বল্প খরচে, দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে তার অভিজ্ঞ আমদানী সেবা ও সেই পণ্য উদ্যোক্তার নিকট পোঁছে দেবার যাবতীয় সহায়তা প্রদান করবে।

বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র স্বীকৃত ডিজিটাল পাব্লিক গুড এবং সহায়ক ই-কমার্স ইকোসিস্টেম একশপ বিগত ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশের অন্তত ১৮০,০০০ এরও বেশি ক্ষুদ্র ও মধ্যম উদ্যোক্তাদের জীবনমানের পরিবর্তনে নানান ভাবে সহায়তা প্রদান করে এসেছে। পর্যায়ক্রমে, বিসিক জামদানী পল্লীর সকল উদ্যোক্তাবৃন্দও একশপ মার্কেটপ্লেসের সকল সুবিধা লাভের সক্ষমতা অর্জন করবেন এবং তারা ডিজিটাল বাজারের অবকাঠামো দ্বারা উপকৃত হবেন।

ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তুরস্ক এবং বাংলাদেশ-এর মধ্যে চলমান ভাতৃত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো সমুন্নত ও সুদৃঢ় থাকবে বলেই দুই পক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করে।